রবীন্দ্রনাথের ‘মণিহারা’ পড়েছেন তো? কিংবা ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ ? আর ইংরেজিতে বলতে হলে ব্রাম স্ট্রোকারের বিখ্যাত বই ‘কাউন্ট ড্রাকুলা’। ‘মণিহারা’ কিংবা ‘ক্ষুধিত পাষাণ’-এ সেই যে বিশালাকায় প্রাসাদের বর্ণনা, ভাঙা জানালা-ঝুলে পড়া বারান্দা নিয়ে ‘মণিহারা’র যে সুপ্রাচীন প্রাসাদ কিংবা ‘ ক্ষুধিত পাষাণ ’-এ যখন মেহের আলী চিৎকার করে বলে ওঠে ‘সব ঝুট হ্যায়, সব ঝুট হ্যায়’ তখন লেখকের বর্ণনা পড়ে যেন এক শিহরণময় অনুভূতি জাগে। ভূত নয়, ভৌতিক পরিবেশ এবং স্পষ্টত সেই পরিবেশের মধ্যে এক অদ্ভুত প্রাচীনত্ব রয়েছে। সাহিত্যের ভাষায় একেই নাম দেওয়া হয়েছে ‘গথিক কাহিনী’। গথিক কথাটাই জুড়ে রয়েছে বিশাল বিশাল সুপ্রাচীন মধ্যযুগীয় স্থাপত্যের সঙ্গে। মধ্যযুগের সেই বিশাল বিশাল দূর্গ, গির্জা, বিশাল অট্টালিকার মধ্যে দাসদের উপর সামন্ত প্রভুদের অত্যাচার, খুন, রক্তপাত, হত্যা, এমনকি সেই সব বিশাল দূর্গের মধ্যেকার শূন্যতা সব মিলিয়ে এক গথিক অনুভব তৈরি করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে তৈরি এই ধরনের গথিক সৌধের গোপন সুড়ঙ্গ, গুপ্ত ঘর, অন্ধকার, রহস্যময়তা এসব মিলিয়েই যখন গল্প-উপন্যাস লেখেন লেখকেরা, সেটিকেই গথিক কাহিনি বলা হয়।