অ্যালজাইমার রোগের চিকিৎসায় কী ডায়েট মানা উচিৎ? - রিয়া অধিকারী
অ্যালজাইরমাস রোগীদের ডায়েট সম্পর্কে জানার আগে আমাদের এই রোগ সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে হবে। অ্যালজাইমার অসুখটি এক ধরনের বার্ধক্যজনিত স্নায়বিক অসুখ যার সুস্পষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। এই অসুখের কারণে রোগীর স্মৃতিশক্তি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয় এবং এখনো পর্যন্ত এই রোগের কোন প্রতিকার চিকিৎসা শাস্ত্রে নেই।
১৯০৬ সালে জার্মান মনোচিকিৎসক ও স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ আলাইস আলৎসাহইমার সর্বপ্রথম এই রোগটির বর্ণনা দেন তাই তার নাম অনুসারে এই অসুখের নামকরণ করা হয়।
সাধারণত আমরা দেখতে পাই যে মধ্য বয়সের শেষে বা ৬৫ বছরের বয়সের বেশি লোকেরা এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে এর শুরু বা উপসর্গ কিন্তু অনেক আগে থেকেই লক্ষ্য করা যায়।
এই অসুখে মস্তিষ্কের কোষগুলি ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়।এই অসুখ একটি নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ যা গোটা পৃথিবীতে প্রায় ৩৬ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে দেখা যায়।
অ্যালজাইমার রোগের লক্ষণ ও পর্যায়
- অ্যালজাইমারস ডিজিজ সংক্ষেপে (AD) যতই বাড়ে রোগীরা ততই স্বাভাবিক কাজগুলো করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে
- কিছু আচরণগত পরিবর্তন তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।
- তাদের খাদ্যাভ্যাস এবং মানুষের সাথে যোগাযোগ করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে
- এই অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্মৃতিশক্তি এবং অন্যান্য ক্ষমতার দক্ষতা কমে যাওয়া সাধারণ বয়স্ক মানুষদের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি হয়।
এই প্রতিটি পর্যায়কে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ দিয়ে চিহ্নিত করা যায়:-
- প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু সাধারন কাজ যেমন কোন কিছু খোলা বন্ধ করা, অসংলগ্ন কথাবার্তা ,নতুন শব্দ ,নাম ইত্যাদি মনে না রাখা বা রাস্তা না চিনতে পারার মতো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
- দ্বিতীয় পর্যায়ে হাঁটাচলা, প্রিয়জনসহ পরিচিত মানুষদের চিনতে ভুল করা, কিছু অস্বাভাবিক আচরণগত পরিবর্তন, মেজাজের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যার জন্য তাদের দৈনন্দিন সাহায্যকারীর প্রয়োজন হয়।
- একদম শেষ পর্যায়ে লক্ষণ গুলি সব থেকে গুরুতরভাবে লক্ষ্য করা যায়। এই সময় রোগীরা স্নান ,খাওয়ার মত প্রাত্যহিক চাহিদা, নিজেদের যত্ন করা, নিজস্ব অনুভূতি প্রকাশের ক্ষমতা, কথা বলার ক্ষমতা হারাতে থাকেন ।এদের এই সময় বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় যাতে তারা জীবনের শেষ দিনগুলো আরামে কাটাতে পারেন।
অ্যালজাইমার রোগের কারণ
- সামুদ্রিক মাছঃ- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত মাছ যেমন টুনা, স্যামন ,কর্ড ,ম্যাকরেল এগুলি সপ্তাহে দুদিন খাদ্য তালিকাতে রাখা যেতে পারে। এগুলি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
- পূর্ণশস্য যুক্ত খাবারঃ- লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, গম, ওটস, হোল গ্ৰেইন পাস্তা বা লাল আটার পাস্তা এই জাতীয় খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত বিনস জাতীয় খাবার।
- বিনস জাতীয় খাবার:- বিনস, সিম ,রাজমা এই ধরনের বীজ জাতীয় খাবার অ্যালজাইমার প্রতিরোধে ভালো কাজ করে বলে ধারণা করা হয়।
- শাকসবজি ও স্যালাড:- সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, ব্রকেলি ,বাঁধাকপি এবং মরসুমি যে সমস্ত সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল পাওয়া যায় সেগুলি খেতে হবে কারণ এই সমস্ত শাকসবজিতে লুটেইন, ভিটামিন ই, বিটা ক্যারোটিন এবং পলিফেনালস রয়েছে যা এই অসুখ কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করতে পারে।
- বিভিন্ন রকম স্যালাড, বাদাম, অলিভ অয়েল এই রোগ প্রতিরোধে ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কিছুটা হলেও সাহায্য করে।
মন্তব্যসমূহ